ভোট পর্যবেক্ষকদের সংগঠন 'দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস' জানিয়েছে, সম্পত্তি এবং নগদ-মূলধনী তহবিল মিলিয়ে বিজেপি দেশের অন্য জাতীয় দলগুলির তুলনায় বহুএগিয়ে রয়েছে।
হাইলাইটস
- দেড় বছর আগেই বিজেপির হাতে নগদ ও মূলধনী খাত মিলিয়ে প্রায় ছ'হাজার কোটি টাকার বিপুল তহবিল ছিল
- ওই সময়ে দেশের শাসক দলের সম্পত্তির পরিমাণও প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছিল
- গেরুয়া শিবিরের হাতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষেই নগদ ও মূলধনী খাত মিলিয়ে ৬০৪১ কোটি টাকার তহবিল ছিল বলে ভোট পর্যবেক্ষকদের সংগঠন 'দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস' বা এডিআর দাবি করেছে
দেড় বছর আগেই বিজেপির হাতে নগদ ও মূলধনী খাত মিলিয়ে প্রায় ছ'হাজার কোটি টাকার বিপুল তহবিল ছিল। ওই সময়ে দেশের শাসক দলের সম্পত্তির পরিমাণও প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছিল। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হবে, নাকি ভোট এগিয়ে আসবে--এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রবল চর্চা শুরু হয়েছে। সেই দিকে তাকিয়ে এখন থেকে বিজেপি হেলিকপ্টার, গাড়ি সব বুক করে নিচ্ছে বলে ক'দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন। সেই গেরুয়া শিবিরের হাতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষেই নগদ ও মূলধনী খাত মিলিয়ে ৬০৪১ কোটি টাকার তহবিল ছিল বলে ভোট পর্যবেক্ষকদের সংগঠন 'দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস' বা এডিআর দাবি করেছে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই এডিআর-এর রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে জাতীয় দলগুলির সম্পত্তি, নগদ ও মূলধনী তহবিল এবং আর্থিক দায়ভারের তথ্য-পরিসংখ্যান সোমবার প্রকাশ করেছে। সেই তথ্য বলছে, সম্পত্তি এবং নগদ-মূলধনী তহবিল মিলিয়ে বিজেপি দেশের অন্য জাতীয় দলগুলির তুলনায় বহু যোজন এগিয়ে রয়েছে। নগদ ও মূলধনী খাতে ওই সময়ে কংগ্রেসের হাতে ছিল প্রায় ৭৬৩ কোটি টাকা। উল্টোদিকে এই সময়ে আর্থিক দায়ভার বা লায়াবিলিডিজ়ের দিক থেকে শীর্ষে ছিল কংগ্রেস। তাদের লায়াবিলিটিজ়ের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা, বিজেপির মাত্র ৫ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা।
ডিআর মূলত ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২--এই দু'টি আর্থিক বছরের তথ্য তুলে ধরেছে। চলতি অর্থবর্ষে জাতীয় দলগুলির হাতে থাকা সম্পত্তি এবং নগদ-মূলধনী তহবিলের তথ্য না-দেওয়া হলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, দেড় বছর আগের তথ্য থেকে বর্তমান ছবি কিছুটা আঁচ করা যেতে পারে। তৃণমূল এখন জাতীয় দলের তকমা হারালেও এডিআর যে সময়ের তথ্য দিয়েছে, সেই সময়ে জোড়াফুল জাতীয় দলই ছিল। এছাড়া বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, বিএসপি, এনসিপি এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের দল এনপিইপি জাতীয় দল ছিল।
এডিআর যে সময়ের তথ্য দিয়েছে, সেই সময়ে করোনার ধাক্কায় টালমাটাল হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। তারপরেও বিজেপির হাতে থাকা বিপুল নগদ ও মূলধনী তহবিলের তথ্য দেখে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন এদিন বলেন, 'নোটবন্দি করে, দেশের লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি জলের দরে বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে বিজেপি নিজেদের তহবিল ভরেছে। এভাবে বিজেপি দেশের ধনী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।' পাল্টা বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'বিজেপি কী ভাবে টাকা তোলে মানুষ জানে।
এই টাকায় দলের প্রচার হয়, পার্টি অফিস তৈরি হয়। বিজেপির টাকা দলীয় তহবিলে থাকে, তৃণমূল নেতাদের মতো বাড়িতে থাকে না।' এডিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কংগ্রেসের সম্পত্তি বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি, তৃণমূলের সম্পত্তি ১৮২ কোটি থেকে বেড়ে ৪৫৮ কোটি হয়েছে। এনিয়ে শমীকের খোঁচা, 'পশ্চিমবঙ্গে সব কিছুতেই তৃণমূল-ট্যাক্স দিতে হয়। তাই তৃণমূলের সম্পত্তি ১৫১ শতাংশ বেড়েছে।' যদিও শান্তনুর ব্যাখ্যা, 'তৃণমূলের আয়-ব্যয় সব কিছু অফিসিয়ালি নথিভুক্ত। নির্বাচন কমিশন থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সেই তথ্য দেওয়া রয়েছে।'